উদ্দ্যোগতাদের গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
উদ্দ্যোগতাদের গল্প লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

খ্যাতিমান উদ্যোক্তা ক্যামেরন হ্যারল্ডের বড় হওয়ার অনুভূতি

Print Friendly and PDF
খ্যাতিমান উদ্যোক্তা ক্যামেরন হ্যারল্ডের জন্ম কানাডায়। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি প্রথম ব্যবসা শুরু করেন। বিভিন্ন দেশে নতুন উদ্যোক্তাদের তিনি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। ২০১০ সালের মার্চ মাসে কানাডার এডমন্টনে টিইডির একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই বক্তব্য দেন।

ক্যামেরন হ্যারল্ড
''এখানে যাঁরা উপস্থিত আছেন, তাঁদের মধ্যে নিঃসন্দেহে আমি সবচেয়ে মাথামোটা! কারণ, আমি ভালোভাবে স্কুলই পাস করতে পারিনি। কিন্তু ছোটবেলাতেই বুঝতে পেরেছিলাম, আমি ব্যবসা বেশ ভালো বুঝি আর বড় হয়ে আমি উদ্যোক্তা হতে চাই।
ছোটবেলায় আমাদের অজস্র স্বপ্ন থাকে, শখ থাকে, জীবনে অনেক কিছু করার প্রবল ইচ্ছে থাকে। আর যখন আমরা বড় হয়ে যাই, আস্তে আস্তে সেসব স্বপ্ন বিবর্ণ হতে হতে মিলিয়ে যায়। আমাদের শুধু বলা হয়, পড়াশোনা করতে হবে, আরও অনেক পড়তে হবে প্রতিদিন, আরও মনোযোগী হতে হবে, আরও একজন শিক্ষকের কাছ প্রাইভেট পড়তে হবে! আমার মা-বাবা একজন শিক্ষক রেখেছিল আমাকে বাসায় এসে ফরাসি পড়ানোর জন্য; কিন্তু কোনো লাভই হয়নি। দুই বছর আগে এমআইটির (ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি) ব্যবসায় উদ্যোগ-বিষয়ক মাস্টার্স প্রোগ্রামে আমি সেরা প্রভাষক নির্বাচিত হই। সেখানে আমাকে সারা পৃথিবী থেকে আসা উদ্যোক্তাদের সামনে বক্তব্য দিতে হয়। মজার ব্যাপার হলো, আমি যখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি, তখনই শহরের একটা বক্তব্য প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পাই। কিন্তু তখন কেউ আমাকে এতটুকু উৎসাহ দিয়ে বলেনি, ‘এই ছেলে তো দারুণ কথা বলতে পারে! হয়তো পড়াশোনায় তেমন মনোযোগী নয়, কিন্তু ও মানুষকে চমৎকারভাবে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।’ কেউ একবারও আমার মা-বাবাকে বলেনি, ‘ওকে বক্তৃতা শেখার জন্য একজন শিক্ষক দাও।’ সবাই বলেছে, ‘যেসব বিষয়ে পরীক্ষায় খারাপ করেছে, সেগুলো পড়তে পাঠাও।’
তাই শিশুদের শুধু চিকিৎসক বা প্রকৌশলী বানানোর চেষ্টা না করে উদ্যোক্তা হওয়ারও সুযোগ দিতে হবে। এটা খুবই দুঃখজনক যে আমাদের স্কুল-কলেজগুলো সবাইকে এটাই বোঝায় যে চিকিৎসক হতেই হবে, কিংবা প্রকৌশলী হতেই হবে। এতে আমরা অনেক সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাকে নিজেদের অজান্তেই হারিয়ে ফেলছি। এমন অনেকে হয়তো এই কক্ষের মধ্যেই আছেন, যাঁদের কোনো কিছু করার তীব্র ইচ্ছে আছে, দারুণ কোনো পরিকল্পনা আছে। আমরা তাঁদের স্বপ্নপূরণে সাহায্য করতে পারি।
একটি প্রাচীন প্রবাদ আছে, ‘তুমি যদি কাউকে একটি মাছ দাও, তাহলে তুমি তার এক দিনের খাবারের ব্যবস্থা করলে। কিন্তু তুমি যদি কাউকে মাছ ধরা শেখাও তাহলে তুমি তার সারা জীবনের খাবারের ব্যবস্থাই নিশ্চিত করে দিলে।’ অভিভাবক ও সমাজের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের উচিত শিশুদের হাতে মাছ তুলে না দিয়ে তা ধরতে শেখানো। আমরা যদি উদ্যোক্তা হওয়াকে একটি সম্ভাবনাময় জীবিকা হিসেবে মেনে নিয়ে ছেলেমেয়েদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ আর সহায়তা দিই, তাহলে সরকারকে আর কখনো বেকারসমস্যা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
আমরা সারা দিন বসে বসে শিশুদের জ্ঞান দিই, কী কী করা উচিত নয়। কাউকে মেরো না, কামড় দিয়ো না, তর্ক কোরো না, এমন আরও শত শত বিধি-নিষেধ! আমরা তাদের বলি, সবচেয়ে ভালো চাকরিটাই পেতে হবে। স্কুলের শিক্ষক বলেন, চিকিৎসক বা প্রকৌশলী হতে না পারলে আর জীবনে হলোটা কী! টেলিভিশন আর পত্রিকা তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়, যদি একবার মডেল, গায়ক কিংবা নায়ক হতে পারো, তাহলে তোমাকে আর পায় কে! আমাদের এমবিএ প্রোগ্রামে কখনো উদ্যোক্তা হতে শেখানো হয় না। সেখানে শুধু শেখানো হয়, কীভাবে বড় বড় কোম্পানির হয়ে চাকরি করতে হবে। কিন্তু একবার কি কেউ ভেবে দেখেছে, এসব বড় কোম্পানি তৈরি করছে কারা? তারা সংখ্যায় হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ, তারা উদ্যোক্তা। আর এদিকে আমরা কেবলই তোতাপাখির মতো শিখিয়ে যাচ্ছি, ‘উদ্ভট কিছু করার চেষ্টাও কোরো না। সবাই যা করে, সেটাই করো। ভালো ছাত্র হও।’ কিন্তু দুঃখিত, ক্লাসে প্রথম হলেই যে কেউ সবকিছু পারবে, তেমন নয়। আমি জোর গলায় স্বীকার করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে আমি অন্যদের দিয়ে আমার অ্যাসাইনমেন্ট করিয়ে নিতাম।
এখন সেই একই বিষয়ের বইয়ে আমার উদাহরণ দেওয়া আছে। সারা কানাডার শিক্ষার্থীরা তা পড়ছে। বইটি লেখার সময় তাঁরা যখন আমার সাক্ষাৎকার নিতে এসেছিলেন, আমি না বলে পারিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে এই কোর্সে আমি কীভাবে পাস করেছিলাম!
উদ্যোক্তা হতে হলে এমবিএ করতেই হবে, স্কুলে ভালো ফল করতেই হবে—এমন কোনো কথা নেই।
আমরা কেন শিশুদের শেখাই না যে টাকাপয়সা যখন খুশি খরচ না করে কীভাবে জমিয়ে পরে ভালো কিছু করা যায়? আমি বড় রাস্তায় একবার একটা পয়সা ফেলে দেওয়ায় আমার বাবা আমাকে একা একা রাস্তার মাঝখানে গিয়ে সেটা তুলে আনার আদেশ করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি খুব কষ্ট করে টাকা উপার্জন করি। আর তাই একটি পয়সাও নষ্ট হওয়া দেখতে চাই না।’ সেদিনের কথা আমি আজও ভুলিনি। হাতখরচ শিশুদের একটি বাজে ব্যাপারে অভ্যস্ত করে তোলে। এটি তাদের ‘বেতন’ আশা করতে শেখায়। একজন উদ্যোক্তা কখনো নির্দিষ্ট অঙ্কের বেতনের পেছনে ছোটেন না। আমার তিন ছেলেমেয়ে। আমি তাদের বলি বাড়িতে কোথাও কিছু ঠিকঠাক করা বা গোছানোর দরকার আছে কি না, তা খুঁজে বের করতে। তারা আমাকে এসে জানায়। তারপর আমরা আলোচনা করে ঠিক করি, কোনো একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য তাদের আমি কত পারিশ্রমিক দিতে পারি! হ্যাঁ, মাঝেমধ্যে আমরা দর-কষাকষিও করি! কিন্তু এতে তাদেরই উপকার হয়। তারা চারপাশ থেকে সুযোগ খুঁজে নিতে শেখে, নিজের কাজ নিজেই করতে শেখে। এ ছাড়া কীভাবে কাজের যথাযথ দাম আদায় করতে হয়, তা-ও শিখে নেয়।
আমি বলব, শিশুদের ঘুমানোর সময় প্রতিদিন গল্প না শুনিয়ে সপ্তাহে তিন দিন অন্তত তাদের গল্প বলতে দেওয়া উচিত। তাদের জামাকাপড়, খেলনা কিংবা কম্পিউটার নিয়েই কিছু বলতে দিয়ে দেখুন না, সে কী গল্প বানায়! আমারসন্তানদের আমি এমনটি প্রায়ই করাই, এতে তারা সৃজনশীল হতে শেখে, নিজেদের মতো করে আনন্দও পায়। তাই শিশুদের কথা বলতে দিন, যা কিছু নিয়েই হোক না কেন। উদ্যোক্তা হতে হলে এসব দক্ষতা খুব প্রয়োজন।
আমরা নিজেদের জীবনে এগুলো নিয়ে সমস্যায় পড়লেও আমাদের শিশুদের গড়ে তোলার বেলায় এগুলোর কথা ভুলে যাই, আমরা শুধু ক্লাসের পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য প্রাইভেট টিচার দিয়েই মনে করি দায়িত্ব শেষ! কিন্তু না, তাদের নেতৃত্ব দিতে শেখাতে হবে। তাদের মনে মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে হবে, আত্মনির্ভরশীল হতে জানতে হবে।''
সূত্র: ওয়েবসাইট
ইংরেজি থেকে সংক্ষেপিত অনুবাদ: অঞ্জলি সরকার

তরুণ উদ্যোক্তা এরিক ফিজেলবর্গ

Print Friendly and PDF
Nabo Prottoy
এরিক ফিজেলবর্গ
তখনো তিনি হাই স্কুলের গণ্ডি পার হননি, অথচ এর মধেই ১১টি ওয়েব বেইজড কোম্পানির মালিক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ উদ্যোক্তার কথা লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম
সাধারণত দেখা যায় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্ররা হাত খরচের টাকা দিয়ে শখের কোনো জিনিস কেনে। কিন্তু এরিক ছিলেন একটু অন্য রকমের। তিনি এই টাকা কখনও খরচ করতেন না। জমিয়ে রাখতেন। সেই সময় থেকেই তিনি চিন্তা করতেন ব্যবসা করার। আর সেজন্যই জমাতেন এই টাকা।
ব্যস, গ্র্যাজুয়েশন শুরু করার আগেই আপলোড করে দিলেন তার ওয়েবসাইটগুলো। মোট ১১টি সাইট খুলেছিলেন তিনি। সেগুলোর সবই বলা যায় নন-প্রফিটেবল ছিল। তার প্রজেক্টগুলোর মধ্যে এমন সাইটও ছিল, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেমিস্টারের প্রজেক্ট ওয়ার্কের বিবরণ দেওয়া থাকত, এমনকি সেগুলোর সমাধানও থাকত। মূলত এই ধরনের কাজের জন্যই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। এ প্রজেক্টগুলো ভালোই চলছিল। একসময় তার কাছ থেকে একটি কোম্পানি তার ওয়েব সাইট কিনতে চাইল। তিনিও রাজি হলেন। ১১টি থেকে তিনটি ওয়েবসাইট বিক্রি করে দিলেন তিনি। ট্রিকার টক, রামানিয়া ফাউন্ডেশন এবং ক্লাসলিফ নামের সাইটগুলো বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি।
পোকাটা তার মাথায় ঢুকেছিল স্টিভ জবসের গল্প পড়ে ও শুনে। তাদের ক্লাসের আরও অনেকে অনুপ্রাণিত ছিলেন এই স্টিভ জবসের কাজে। কিন্তু তার মতো করে বুকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পেরেছে খুব কম মানুষই। বিখ্যাত আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা জবসের জীবনের শুরুটাও খানিকটা এলোমেলো। পড়ালেখায় মন ছিল না, বাদ পড়ে গিয়েছিলেন কলেজ থেকে। এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র একুশ বছর বয়সে মনের মতো কম্পিউটার বানানোর চিন্তা থেকে অ্যাপলের শুরু।
নিজের কম্পিউটার নেড়েচেড়ে সে রকমই কিছু করার ইচ্ছাটা হয়তো উঁকি দিয়েছিল ওয়েনসের মাথায়। ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দিয়ে যেটা করে বসল তাতে অন্তত একদিক থেকে শুধু জবস কেন, অন্য সবাইকে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে হয়ে গেছে মিলিয়ন পাউন্ডের মালিক। মাত্র সাত বছর বয়সে তার হাতেখড়ি কম্পিউটার চালানোয়। প্রথমে সারাক্ষণ এ যন্ত্রটি নিয়েই মেতে থাকতেন। ফলে অল্প কয়েক দিনে ওয়েব ডিজাইনের মতো জটিল সব কারবার তার আয়ত্তে চলে আসে। ১০ বছর বয়সে পেয়েছিলেন একটি মেকিন্টোশ কম্পিউটার। তখন এতে ছোটখাটো প্রোগ্রাম বানাতে শুরু করেন তিনি। চার বছর পর ২০০৮ সালে হাতখরচের পয়সা বাঁচিয়ে নিজের একটি ওয়েবসাইট খোলেন। নাম দেয় ম্যাক বঙ্ বান্ডেল। সেখান থেকে তার তৈরি প্রোগ্রাম বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ কিনতে পারতেন টাকার বিনিময়ে। ব্যবসায়িক বুদ্ধি অবশ্য ভালোই খাটিয়েছেন ছোট্ট এরিক। নিজের পাশাপাশি অন্যান্য নির্মাতার বানানো প্রোগ্রামও বিক্রির সুযোগ করে দিয়েছিলেন তার সাইটে। কেউ একসঙ্গে অনেক প্রোগ্রাম কিনতে চাইলে কখনো ১০ শতাংশ দামে বিক্রি করে দিতেন তিনি। আর প্রতিটি প্রোগ্রাম বিক্রির কিছু অংশ কোষাগারে জমা হতো সেবামূলক কাজে ব্যয়ের জন্য। এতে অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়ে যান তিনি। একই সঙ্গে ভারি হতে থাকে তার টাকার ঝোলা। দুই বছরের মাথায় আয় পৌঁছে যায় ৭০ হাজার পাউন্ডে।
দ্রুত সাফল্য পেয়ে থেমে যাননি তিনি। এরপর বেছে নিয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক বিজ্ঞাপনের কাজ। এরপর ব্রাঞ্চর নামে বিজ্ঞাপন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে নতুন একটি ওয়েবসাইট খোলেন তিনি। এখান থেকে মাসে অন্তত ৩০০ মিলিয়ন বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে যায় ইন্টারনেট ও আইফোনে। সেসব বিজ্ঞাপনে কেউ ক্লিক করামাত্র টাকা চলে আসে ওয়েনসের নামে। এরই মধ্যে এই ব্যবসা থেকে পাওয়া গেছে পাঁচ লাখ পাউন্ড। উইলিয়াম হিলের মতো বড় বড় কোম্পানি এখন তার সেবা গ্রহণ করে।
দুটি প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তা তিনি নিজে। এর সদর দপ্তর তার ঘরে কম্পিউটারের সামনের জায়গাটুকু। এখানে তিনি আবার চাকরিও দিয়েছে আটজনকে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বাস করা কর্মীরা সবাই বয়সে তার চেয়ে বড়। তারা ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানাভাবে সাহায্য করে তাকে। স্কুল শেষে ও সপ্তাহান্তে অবসর পেলে তিনি বসে যান ব্যবসার কাজে। সামনের বছরে দুটো শাখা খোলার পরিকল্পনা আছে তার। ব্যবসা নিয়ে কেউ কথা বলতে এলে বেশ ভারিক্কিভাব চলে আসে তার মধ্যে। নাকের ওপর চশমাটা পেছনে ঠেলে আরও শক্ত করে বসিয়ে নেন।
ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘১০ বছর পরে কেমন থাকব তা জানি না, কিন্তু ১০০ মিলিয়ন আয় না করা পর্যন্ত থামছি না।’ তিনি চান তার ছেলেবেলার নায়ক স্টিভ জবসের মতো তার নামও সবার মুখে মুখে প্রচারিত হোক।
সম্প্রতি তিনি একটি বিশাল প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন। ২০১৩-এর শেষ দিকে সেটার প্রকাশ ঘটবে বলে জানিয়েছেন তিনি, তবে কী নিয়ে কাজ করছেন সে সম্পর্কে কোনো ধারণাই দিতে চাননি এই তরুণ প্রতিভা।
(সূত্র: ইত্তেফাক | লেখক: প্রাঞ্জল সেলিম)

ব্যবসায় সফল উদ্যোক্তা হতে চাইলে

Print Friendly and PDF
মো: বাকিবিল্লাহ


দৃশ্যপট ১

Nabo Prottoyমাহবুবুল হক। ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্ন সফল উদ্যোক্তা হবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। সফলতার সাথে সেটি পরিচালনা করে তিন বছরের ব্যবধানে মালিক হলেন আরো কয়েকটি কোম্পানির। বর্তমানে একটি গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একজন সফল উদ্যোক্তা।


দৃশ্যপট ২

মাহদী হাসান। ছাত্রজীবনে তিনিও স্বপ্ন দেখতেন সফল উদ্যোক্তা হবার। পড়াশোনা শেষ করে করে তিনিও প্রতিষ্ঠা করেন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। পাঁচ বছরেও তেমন কোনো সফলতার দেখা পেলেন না। অবশেষে সব কিছু বাদ দিয়ে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
এমন বিপরীতমুখী দৃশ্য আমরা প্রায়ই দেখি। অনেকেই চান ব্যবসা করতে। সফল উদ্যোক্তা হতে। কিন্তু কেউ হতে পারেন। কেউ পারেন না। কিন্তু কেন? আসুন জেনে নেই সফল উদ্যোক্তার কিছু বৈশিষ্ট্য।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে একজন সফল উদ্যোক্তার নিম্নোক্ত গুণাবলী থাকে।


১. আত্মবিশ্বাস

এটি এক জাদুকরি শক্তি যা নিজের কর্মকাণ্ড এবং নিজের শক্তি-সামর্থের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। বলা হয়- আত্মবিশ্বাসই সফলতার মূল শর্ত। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।


২. লক্ষ্যভিত্তিক প্রচেষ্টা

ভালো ফল পেতে হলে কোনো কাজ করার আগে লক্ষ্য নির্ধারণ করা দরকার। আরো দরকার নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা। একজন সফল উদ্যোক্তা শুধু কিছু কাজই সম্পাদন করেন না। বরং সব সময় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে মনযোগী হন।


৩. ঝুঁকি গ্রহণ

একজন সফল উদ্যোক্তা অনুধাবন করেন যে, কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে তিনি ক্ষতির সম্মুখীনও হতে পারেন। তবুও লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ঝুঁকি গ্রহণের মতো প্রয়োজনীয় মানসিকতা ও সাহস তার থাকে।
ব্যবসায় উদ্যোক্তা হলেন তারা- যারা সিদ্ধান্ত নেবেন, ব্যবস্থা নেবেন। বিশ্বাস করেন যে, নিজেদের ভাগ্য তারা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তারা মনে করেন, সফলতা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে না। বরং তা নির্ভর করে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের ওপর।
তাহলে উপরের কোন বৈশিষ্ট্যটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস ছাড়া কোনো কিছুই করা সম্ভব নয়। আপনি যদি নিজের সামর্থের ওপর আস্থা রাখতে না পারেন, তবে প্রথম যে সমস্যাটি হবে সেটি হলো- লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।
আপনার আত্মবিশ্বাসকে উচ্চতর পর্যায়ে রাখতে কিছু কৌশল আলোচনা করা হলো-


ইতিবাচক চিন্তা

ইতিবাচক চিন্তার শুরুটা হবে ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে। কাজ শুরুর আগে মনে করুন, প্রথম ধাপেই ভালো কিছু একটা হবে। নেতিবাচক চিন্তাকে মোটেই প্রশ্রয় দিবেন না এক্ষেত্রে। বিশ্বাস রাখুন, আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে না পৌঁছানোর কোনো কারণই নেই।
মনে রাখবেন, ইতিবাচক চিন্তা সংক্রামক। যখন তা ছড়িয়ে পড়ে- তখন নতুন নতুন বন্ধু, গ্রাহক ও আইডিয়ার জন্ম দেয়।
নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকা
আপনার সব ইতিবাচক চিন্তা, বিশ্বাস ও আইডিয়া পৃথিবীতে অচল যদি আপনি তা কাজে না লাগান। আপনাকে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। কাজ করতে হবে। কোনো ধরনের অভিযোগ চলবে না এক্ষেত্রে। কাজ করতে হবে নাছোড়বান্দার মতো।
কোনো ধাপ অতিক্রম করতে একটি উপায় একবার অবলম্বন করুন। সফল না হলে নতুন উপায় বের করে আবার চেষ্টা করুন। সফল হওয়ার আগে কাজটি ছেড়ে দেয়া চলবে না।
প্রবন্ধের প্রথমাংশে যে বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছি- তা সব সফল উদ্যোক্তারই থাকে। আপনিও সামনের দিকে তাকান। আপনাকে কোন অবস্থানে দেখতে চান, তা নির্দিষ্ট করুন। নিজের সামর্থ, শক্তি ও দক্ষতার ওপর আস্থা রাখুন। নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যান। কোনোভাবেই পিছিয়ে যাবেন না। প্রচেষ্টা ছেড়ে দিবেন না। আর তা যদি করতে পারেন, তবে অর্ধেক পথ পৌঁছে গেছেন -এ কথা মনে করতেই পারেন আপনি।

 
Design by AbsCreation