মা. হাবিবুর রহমান
সারা বছর লেখাপড়া না করে পরীক্ষার পূর্বে চোখে অন্ধকার দেখা কোন কোন সময় পড়া ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া কোন কোন শিক্ষার্থীর স্বভাব ভাই হতাশ হবেন না। সহিঞ্চু হয়ে পড়তে শুরু করেন। পাহাড় বলে যা মনে হচ্ছে তা মিষ্টি হালুয়া বলে মনে হবে। যা ভুল হয়েছে তা হয়েছে। আর বিলম্ব না করে ধৈর্যশীল হয়ে পড়তে থাকুন। দেখতে পাবেন কয়েক দিনেই অনেকটা এগিয়ে গেছেন। বসে বসে ভাবলে কিছু লাভ হবে না। ওতে যা পারতেন তাও পারবেন না। যে আপনার চেয়ে ভাল জানে সে আপন সহপাঠী হলেও অহংকার ত্যাগ করে তার কাছে সহযোগিতা নিন। তাতে কোন লজ্জাবোধ করবেন না। পূর্ববর্তী মহা মনীষীগণ তো এরূপ করেই উচ্চ আসরে আসীন হয়েছেন। লজ্জা তাদের অধ্যয়নের কোন ক্ষেত্রেই পরাভূত করতে পারেনি। অনুরূপ তারা অহংকারও করতেন না। কারণ অহংকার করলেই মানুষ কার্য ক্ষেত্রে ঠকে যায়। যে বেশী জানে তার কাছে গিয়ে নত হয়ে পড়া-শুনা নেয়া ভাল।
মেধাবী ছাত্র শিক্ষকের মত সহপাঠীকে পড়িয়ে দিতে পারে। কোন ভাই লজ্জাবোধ করে আজ তার কাছে যাচ্ছে না। কাল সে আপনাকে ছেড়ে উচ্চ শ্রেণীতে পদার্পন করবে এবং শিক্ষার উচ্চ আসন দখল করে নিবে। আপনি যেখানে বর্তমান, সেখানে পড়ে থেকেই অর্থ সম্মান হারাবেন। অনেক শিক্ষার্থী ভাবে যে, আমি খুব জানি। এ ধারণা সর্বনাশের মূল। খরগোশ বেশী দৌড়াতে পারলেও অনেক সময় কচ্চপের কাছে হেরে যায়।
তাই বছরের প্রথমে প্রত্যেকদিনকার পড়া প্রত্যেক দিনইে পড়ে নেয়া উচিৎ। কখনও অলসতা করে ফেলে রাখা উচিৎ নয়। তাতে পরীক্ষার সময় মাথায় পাহাড় চাপবে। ফলে অকৃতকার্যই অনিবার্য হয়ে দাড়াবে।
একদা হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহর তরফ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হলেন যে, আগামীকাল প্রাতে প্রথমে মাঠে যা দেখতে পাবে, তাই আহার করবে। তিনি প্রাত:কালে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখলেন একটা বিরাট পাহাড়। পাহাড় দেখেই মূসা (আঃ) ভীত হলেন। ঘাবরে গেলেন কি করে এত বড় পাহাড় খাব। কিন’ খোদার নির্দেশ । তা অমান্য করা যায় না। তাই তিনি অগ্রসর হতে লাগলেন । যতই নিকটবর্তী হতে লাগলেন ততই বৃহৎ দর্শন পাহাড় ভুদ্র হতে লাগলো। নিকটে যেয়ে দেখলেন পাহাড় নয় এক টুকরা হালুয়া মাত্র। পরম আনন্দে মুখে ফেলে দিয়ে সুস্বাদু হালুয়াটা খেয়ে ফেললেন।
ভাই শিক্ষার্থী ! আপনি জানেন এঘটনার শিক্ষা কি? শুনুন এঘটনার দ্বারা শিক্ষা হল- কোন কাজ দূর থেকে কঠিন মনে হলেও চেষ্টা করলে তা অতি সহজ হয়ে ওঠে। কাজ দেখে কখনও ভয় পেতে নেই। গুরুত্ব সহকারে একটু চেষ্টা করা দরকার। শিক্ষা কালীন যারা অশ্লীল ও বেহায়াপনা কাজে জড়িত থাকে, তারা পাঠে মনঃসংযোগ করতে পারে না। পড়াও তাদের হয় না। মনটা থাকে মাতাল, অসৎ সাহচর্যে , অশোভ গান, সংগীত, দুন্দ পুস্তক, অশ্লীল আলাপ, নারী সম্প্রীতি ও মোবাইল ব্যবহার পরিত্যাগ করতে হবে এবং একান্ত অলংঘনীয় কর্তব্য । নতুবা লেখাপড়ায় সাফল্য অর্জন করতে পারবে না।
প্রিয় পাঠক,শিক্ষার্থী বন্ধুগণ! আমার এই পরামর্শটা কেমন লাগলো? অশোভ মনে হল না তো? আসলে আমাদের জীবনের মুহুর্তগুলোকে এভাবে ভেবে-চিন্তে পরিচালনা করা উচিৎ। আসুন আমরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় নিজেরেকে যথাযথ আত্ননিয়োগ করি এবং আদর্শ মানব হিসেবে গড়ে তুলি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।
0 comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন