ক্যারিয়ার গাইড লাইন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ক্যারিয়ার গাইড লাইন লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা

Print Friendly and PDF

গবেষণা হোক কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেস হোক কিংবা আর্টস যে কোনো বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্রের ডিগ্রি বিশ্বমানের। আর তাই উন্নত প্রযুক্তির স্বাদ নিতে

www.naboprottoy.blogspot.com
অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র। তার সাথে রয়েছে স্কলারশিপ ও পার্টটাইম চাকরির সুযোগ, যা আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সুবিধার  পাশাপাশি আগ্রহও বাড়িয়ে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার নিয়মকানুন সম্পর্কে  বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কলামিষ্ট-ফাতেমা মাহফুজ।
লেখাপড়ার ভাষা ও যোগ্যতা
যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়ার ভাষা ইংরেজি। তবে ভাষার ওপর দক্ষতা ও যোগ্যতা যাচাই করার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি তাদের পছন্দ অনুযায়ী টেস্ট পরীক্ষা নিয়ে থাকে। যেমন: SAT, ACT, GMAT, GRE, IELTS, MAT, TOFEL, TSE ইত্যাদি। যারা অনার্স করতে চান, তাদের অবশ্যই SAT অথবা ACT পরীক্ষা দিতে হবে। বর্তমানে মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য GRE  টেস্টের নাম্বারটা গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। এসব টেস্টের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করতে পারেন-
শিক্ষা ব্যবস্থা
এখানকার উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের সময়কাল আমাদের দেশের মতোই। ব্যাচেলর কোর্স করতে ৩-৪ বছর আর মাস্টার্স করতে ২ বছর লাগে। তবে পিএইচডি’র সময়সীমা রিসার্চের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। তাছাড়া এখানে নন-ডিগ্রি প্রোগ্রামেরও আয়োজন করা হয়।
পড়ার বিষয়
প্রায় সব বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া যায়। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী সেখানে গবেষণামূলক বিষয় বা ইঞ্জিনিয়ারিং করতে যায়। উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় হলো- ফিজিক্স, ম্যাথ, কেমিস্ট্রি, বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন, আর্টস, সোশ্যাল সায়েন্স, আইন, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি। এছাড়া মেডিক্যাল সায়েন্সের নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপরে গবেষণা করা যায়।
খরচ
যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়ার মান উন্নত হওয়ার পাশাপাশি খরচ অনেক বেশি। চার বছরের কোর্স করতে টিউশন ফি ১৫-২০ লাখ টাকা। তাছাড়া মাস্টার্স কোর্স করতে টার্ম প্রতি প্রায় ৩০-৭০ হাজার টাকার মতো লাগবে।

স্কলারশিপ ও পার্টটাইম জব
টাকার খরচ দেখে অনেকে হয়তো ঘাবড়ে যেতে পারেন। কিন্তু চিন্তার কিছু নেই, কেননা সেখানে আছে পার্টটাইম চাকরির সুযোগ। আছে ৭৫% পর্যন্ত স্কলারশিপ পাওয়ার ব্যবস্থা। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের সর্বশেষ স্কলারশিপের ব্যাপারে জানতে পারেন। বিস্তারিত জানতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসেও যোগাযোগ করতে পারেন। তবে স্কলারশিপের জন্য অবশ্যই বিগত পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তির আগে তারা যেসব পরীক্ষা নেবে তাতে নির্দিষ্ট মার্কস পেতে হবে। এ সংক্রান্ত কিছু লিঙ্ক-
ভর্তি এবং অত:পর
আপনি যদি অনার্স কোর্স করতে যেতে চান, তবে ঝঅঞ অথবা অঈঞ পরীক্ষার পর আপনার পছন্দের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ভর্তিফর্ম সংগ্রহসহ যাবতীয় নিয়ম জেনে নিন।  আর আপনি যদি গবেষণার কোনো বিষয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হতে চান, তাহলে যার অধীনে আপনি গবেষণা করতে আগ্রহী, তাকে নিজের যোগ্যতা, দক্ষতা, থিসিস দিয়ে মোটিভেশান চালান। স্টেটমেন্ট অব মোটিভেশান, সিভি পাঠান। ঘরে বসেই তাদের সাথে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ বাড়ান। অত:পর সেখান থেকে সাড়া পেলে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে ভিসা সংগ্রহ করুন।
থাকার ব্যবস্থা
ভর্তির পর অবশ্যই ক্লাস শুরুর আগেই সেখানে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব হোস্টেল আছে, তারপরও অনেকেই মাসিক ব্যয়, যাতায়াত খরচ ও যাবতীয় সুবিধা বিবেচনা করে হোটেল, মোটেল, যুব হোস্টেল, আন্তর্জাতিক হাউজিং, এমনকি সেখানকার স্থানীয় ফ্যামিলির সাথেও  থাকেন। আরো বেশি জানতে জানতে নিচের লিঙ্কে  ভিজিট করুন-
সেরা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ
মনে রাখা ভালো, যেহেতু বিদেশে প্রচুর প্রতিযোগিতা, তাই নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করতে হবে। নিম্নে কিছু বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট দেয়া হলো। আগ্রহীরা ভিজিট করতে পারেন।

তরুণ উদ্যোক্তা এরিক ফিজেলবর্গ

Print Friendly and PDF
Nabo Prottoy
এরিক ফিজেলবর্গ
তখনো তিনি হাই স্কুলের গণ্ডি পার হননি, অথচ এর মধেই ১১টি ওয়েব বেইজড কোম্পানির মালিক হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই ১৭ বছর বয়সী এই তরুণ উদ্যোক্তার কথা লিখেছেন প্রাঞ্জল সেলিম
সাধারণত দেখা যায় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছাত্ররা হাত খরচের টাকা দিয়ে শখের কোনো জিনিস কেনে। কিন্তু এরিক ছিলেন একটু অন্য রকমের। তিনি এই টাকা কখনও খরচ করতেন না। জমিয়ে রাখতেন। সেই সময় থেকেই তিনি চিন্তা করতেন ব্যবসা করার। আর সেজন্যই জমাতেন এই টাকা।
ব্যস, গ্র্যাজুয়েশন শুরু করার আগেই আপলোড করে দিলেন তার ওয়েবসাইটগুলো। মোট ১১টি সাইট খুলেছিলেন তিনি। সেগুলোর সবই বলা যায় নন-প্রফিটেবল ছিল। তার প্রজেক্টগুলোর মধ্যে এমন সাইটও ছিল, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেমিস্টারের প্রজেক্ট ওয়ার্কের বিবরণ দেওয়া থাকত, এমনকি সেগুলোর সমাধানও থাকত। মূলত এই ধরনের কাজের জন্যই ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। এ প্রজেক্টগুলো ভালোই চলছিল। একসময় তার কাছ থেকে একটি কোম্পানি তার ওয়েব সাইট কিনতে চাইল। তিনিও রাজি হলেন। ১১টি থেকে তিনটি ওয়েবসাইট বিক্রি করে দিলেন তিনি। ট্রিকার টক, রামানিয়া ফাউন্ডেশন এবং ক্লাসলিফ নামের সাইটগুলো বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি।
পোকাটা তার মাথায় ঢুকেছিল স্টিভ জবসের গল্প পড়ে ও শুনে। তাদের ক্লাসের আরও অনেকে অনুপ্রাণিত ছিলেন এই স্টিভ জবসের কাজে। কিন্তু তার মতো করে বুকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পেরেছে খুব কম মানুষই। বিখ্যাত আইটি প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা জবসের জীবনের শুরুটাও খানিকটা এলোমেলো। পড়ালেখায় মন ছিল না, বাদ পড়ে গিয়েছিলেন কলেজ থেকে। এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র একুশ বছর বয়সে মনের মতো কম্পিউটার বানানোর চিন্তা থেকে অ্যাপলের শুরু।
নিজের কম্পিউটার নেড়েচেড়ে সে রকমই কিছু করার ইচ্ছাটা হয়তো উঁকি দিয়েছিল ওয়েনসের মাথায়। ইচ্ছাকে প্রশ্রয় দিয়ে যেটা করে বসল তাতে অন্তত একদিক থেকে শুধু জবস কেন, অন্য সবাইকে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি। মাত্র ১৬ বছর বয়সে হয়ে গেছে মিলিয়ন পাউন্ডের মালিক। মাত্র সাত বছর বয়সে তার হাতেখড়ি কম্পিউটার চালানোয়। প্রথমে সারাক্ষণ এ যন্ত্রটি নিয়েই মেতে থাকতেন। ফলে অল্প কয়েক দিনে ওয়েব ডিজাইনের মতো জটিল সব কারবার তার আয়ত্তে চলে আসে। ১০ বছর বয়সে পেয়েছিলেন একটি মেকিন্টোশ কম্পিউটার। তখন এতে ছোটখাটো প্রোগ্রাম বানাতে শুরু করেন তিনি। চার বছর পর ২০০৮ সালে হাতখরচের পয়সা বাঁচিয়ে নিজের একটি ওয়েবসাইট খোলেন। নাম দেয় ম্যাক বঙ্ বান্ডেল। সেখান থেকে তার তৈরি প্রোগ্রাম বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষ কিনতে পারতেন টাকার বিনিময়ে। ব্যবসায়িক বুদ্ধি অবশ্য ভালোই খাটিয়েছেন ছোট্ট এরিক। নিজের পাশাপাশি অন্যান্য নির্মাতার বানানো প্রোগ্রামও বিক্রির সুযোগ করে দিয়েছিলেন তার সাইটে। কেউ একসঙ্গে অনেক প্রোগ্রাম কিনতে চাইলে কখনো ১০ শতাংশ দামে বিক্রি করে দিতেন তিনি। আর প্রতিটি প্রোগ্রাম বিক্রির কিছু অংশ কোষাগারে জমা হতো সেবামূলক কাজে ব্যয়ের জন্য। এতে অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়ে যান তিনি। একই সঙ্গে ভারি হতে থাকে তার টাকার ঝোলা। দুই বছরের মাথায় আয় পৌঁছে যায় ৭০ হাজার পাউন্ডে।
দ্রুত সাফল্য পেয়ে থেমে যাননি তিনি। এরপর বেছে নিয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক বিজ্ঞাপনের কাজ। এরপর ব্রাঞ্চর নামে বিজ্ঞাপন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে নতুন একটি ওয়েবসাইট খোলেন তিনি। এখান থেকে মাসে অন্তত ৩০০ মিলিয়ন বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে যায় ইন্টারনেট ও আইফোনে। সেসব বিজ্ঞাপনে কেউ ক্লিক করামাত্র টাকা চলে আসে ওয়েনসের নামে। এরই মধ্যে এই ব্যবসা থেকে পাওয়া গেছে পাঁচ লাখ পাউন্ড। উইলিয়াম হিলের মতো বড় বড় কোম্পানি এখন তার সেবা গ্রহণ করে।
দুটি প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তা তিনি নিজে। এর সদর দপ্তর তার ঘরে কম্পিউটারের সামনের জায়গাটুকু। এখানে তিনি আবার চাকরিও দিয়েছে আটজনকে। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বাস করা কর্মীরা সবাই বয়সে তার চেয়ে বড়। তারা ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানাভাবে সাহায্য করে তাকে। স্কুল শেষে ও সপ্তাহান্তে অবসর পেলে তিনি বসে যান ব্যবসার কাজে। সামনের বছরে দুটো শাখা খোলার পরিকল্পনা আছে তার। ব্যবসা নিয়ে কেউ কথা বলতে এলে বেশ ভারিক্কিভাব চলে আসে তার মধ্যে। নাকের ওপর চশমাটা পেছনে ঠেলে আরও শক্ত করে বসিয়ে নেন।
ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘১০ বছর পরে কেমন থাকব তা জানি না, কিন্তু ১০০ মিলিয়ন আয় না করা পর্যন্ত থামছি না।’ তিনি চান তার ছেলেবেলার নায়ক স্টিভ জবসের মতো তার নামও সবার মুখে মুখে প্রচারিত হোক।
সম্প্রতি তিনি একটি বিশাল প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন। ২০১৩-এর শেষ দিকে সেটার প্রকাশ ঘটবে বলে জানিয়েছেন তিনি, তবে কী নিয়ে কাজ করছেন সে সম্পর্কে কোনো ধারণাই দিতে চাননি এই তরুণ প্রতিভা।
(সূত্র: ইত্তেফাক | লেখক: প্রাঞ্জল সেলিম)

ব্যবসায় সফল উদ্যোক্তা হতে চাইলে

Print Friendly and PDF
মো: বাকিবিল্লাহ


দৃশ্যপট ১

Nabo Prottoyমাহবুবুল হক। ছাত্রজীবন থেকেই স্বপ্ন সফল উদ্যোক্তা হবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। সফলতার সাথে সেটি পরিচালনা করে তিন বছরের ব্যবধানে মালিক হলেন আরো কয়েকটি কোম্পানির। বর্তমানে একটি গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। একজন সফল উদ্যোক্তা।


দৃশ্যপট ২

মাহদী হাসান। ছাত্রজীবনে তিনিও স্বপ্ন দেখতেন সফল উদ্যোক্তা হবার। পড়াশোনা শেষ করে করে তিনিও প্রতিষ্ঠা করেন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। পাঁচ বছরেও তেমন কোনো সফলতার দেখা পেলেন না। অবশেষে সব কিছু বাদ দিয়ে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন।
এমন বিপরীতমুখী দৃশ্য আমরা প্রায়ই দেখি। অনেকেই চান ব্যবসা করতে। সফল উদ্যোক্তা হতে। কিন্তু কেউ হতে পারেন। কেউ পারেন না। কিন্তু কেন? আসুন জেনে নেই সফল উদ্যোক্তার কিছু বৈশিষ্ট্য।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে একজন সফল উদ্যোক্তার নিম্নোক্ত গুণাবলী থাকে।


১. আত্মবিশ্বাস

এটি এক জাদুকরি শক্তি যা নিজের কর্মকাণ্ড এবং নিজের শক্তি-সামর্থের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। বলা হয়- আত্মবিশ্বাসই সফলতার মূল শর্ত। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে এ গুণটি থাকা অপরিহার্য।


২. লক্ষ্যভিত্তিক প্রচেষ্টা

ভালো ফল পেতে হলে কোনো কাজ করার আগে লক্ষ্য নির্ধারণ করা দরকার। আরো দরকার নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা। একজন সফল উদ্যোক্তা শুধু কিছু কাজই সম্পাদন করেন না। বরং সব সময় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে মনযোগী হন।


৩. ঝুঁকি গ্রহণ

একজন সফল উদ্যোক্তা অনুধাবন করেন যে, কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে তিনি ক্ষতির সম্মুখীনও হতে পারেন। তবুও লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ঝুঁকি গ্রহণের মতো প্রয়োজনীয় মানসিকতা ও সাহস তার থাকে।
ব্যবসায় উদ্যোক্তা হলেন তারা- যারা সিদ্ধান্ত নেবেন, ব্যবস্থা নেবেন। বিশ্বাস করেন যে, নিজেদের ভাগ্য তারা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তারা মনে করেন, সফলতা ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে না। বরং তা নির্ভর করে নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের ওপর।
তাহলে উপরের কোন বৈশিষ্ট্যটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ? বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস ছাড়া কোনো কিছুই করা সম্ভব নয়। আপনি যদি নিজের সামর্থের ওপর আস্থা রাখতে না পারেন, তবে প্রথম যে সমস্যাটি হবে সেটি হলো- লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে।
আপনার আত্মবিশ্বাসকে উচ্চতর পর্যায়ে রাখতে কিছু কৌশল আলোচনা করা হলো-


ইতিবাচক চিন্তা

ইতিবাচক চিন্তার শুরুটা হবে ইতিবাচক আচরণের মাধ্যমে। কাজ শুরুর আগে মনে করুন, প্রথম ধাপেই ভালো কিছু একটা হবে। নেতিবাচক চিন্তাকে মোটেই প্রশ্রয় দিবেন না এক্ষেত্রে। বিশ্বাস রাখুন, আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্যে না পৌঁছানোর কোনো কারণই নেই।
মনে রাখবেন, ইতিবাচক চিন্তা সংক্রামক। যখন তা ছড়িয়ে পড়ে- তখন নতুন নতুন বন্ধু, গ্রাহক ও আইডিয়ার জন্ম দেয়।
নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকা
আপনার সব ইতিবাচক চিন্তা, বিশ্বাস ও আইডিয়া পৃথিবীতে অচল যদি আপনি তা কাজে না লাগান। আপনাকে তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। কাজ করতে হবে। কোনো ধরনের অভিযোগ চলবে না এক্ষেত্রে। কাজ করতে হবে নাছোড়বান্দার মতো।
কোনো ধাপ অতিক্রম করতে একটি উপায় একবার অবলম্বন করুন। সফল না হলে নতুন উপায় বের করে আবার চেষ্টা করুন। সফল হওয়ার আগে কাজটি ছেড়ে দেয়া চলবে না।
প্রবন্ধের প্রথমাংশে যে বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছি- তা সব সফল উদ্যোক্তারই থাকে। আপনিও সামনের দিকে তাকান। আপনাকে কোন অবস্থানে দেখতে চান, তা নির্দিষ্ট করুন। নিজের সামর্থ, শক্তি ও দক্ষতার ওপর আস্থা রাখুন। নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টা চালিয়ে যান। কোনোভাবেই পিছিয়ে যাবেন না। প্রচেষ্টা ছেড়ে দিবেন না। আর তা যদি করতে পারেন, তবে অর্ধেক পথ পৌঁছে গেছেন -এ কথা মনে করতেই পারেন আপনি।

তরুণরা ইচ্ছে করলেই ক্যারিয়ার হিসেবে লেখালেখির জগৎকে সমৃদ্ধ করতে পারে

Print Friendly and PDF
নব প্রত্যয় ফাউন্ডেশন
কবি আসাদ চৌধুরী
আসাদ চৌধুরী। বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক। মনোগ্রাহী টেলিভিশন উপস্থাপনা ও আবৃত্তির জন্য জনপ্রিয় তিনি। আসাদ চৌধুরীর 
জন্ম ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া নামক স্থানে। পিতা মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী। মাতা সৈয়দা মাহমুদা বেগম। স্ত্রী সাহানা বেগম।
উলানিয়া হাই স্কুল থেকে  প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৯৫৭ সালে। ১৯৬০ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে। পরবর্তীকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যয়ন করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে আসাদ চৌধুরীর কর্মজীবন শুরু। ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীকালে ঢাকায় বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবদিকতা করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত তিনি ভয়েস অব জার্মানির বাংলাদেশ সংবাদদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকায় বাংলা একাডেমীতে দীর্ঘকাল চাকুরির পর তিনি এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
তরুণ প্রজন্মের ক্যারিয়ার ও লেখালেখি ইত্যাদি নানা বিষয়ে ক্যারিয়ার ইনটেলিজেন্সের সাথে কথা বলেছেন তিনি।
ভালো লেখক হতে হলে কী প্রয়োজন?
- এখানে একটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে, আমি কার জন্য লিখছি? পাঠকের জন্য নাকি নিজের আত্মতৃপ্তির জন্য? যদি কোনো লেখা নিজের জন্য হয়, তবে তার ভঙ্গিটা হবে এক রকম। আবার যদি পাঠকের জন্য লেখাটা লিখি তবে তার উপস্থাপনটা হবে আরেক রকম। এখানেই মূলত ভালো লেখক হওয়ার উপাদানটি নির্ভর করছে। বাক্যের গঠন, বিষয়বস্তু, সমসাময়িকতা, প্রাসঙ্গিকতার মতো ছোট খাটো বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিয়মিত পরিশ্রম করে এগোতে পারলে এক সময়  ভালো লেখক হয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
বর্তমানে অনেক তরুণ লেখালেখিকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিচ্ছে -এটা কতটা যুক্তি সঙ্গত বলে মনে করেন?
- অযৌক্তিকতার কিছু নেই। বরং লেখালেখি জগতে তরুণদের পদচারণা সাহিত্য জগতে অন্য রকম প্রাণ সৃষ্টি করছে। বর্তমানে জীবন নির্বাহের জন্য অন্য পেশার মতো লেখালেখিকে বেছে নেয়া সম্ভব। এখানে যথেষ্ঠ সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা আছে। আমাদের দেশের তরুণ লেখকরা যদিও এটাকে খণ্ডকালীন হিসেবে বেছে নিয়েছেন, কিন্তু তারা ইচ্ছে করলে এখানে পূর্ণকালীন কাজ করে ভালো ক্যারিয়ার হিসেবে এ জগৎ-কে আরো সমৃদ্ধ করতে পারে।
জীবনে সফল হতে কী করা উচিৎ?
- যে কোনো বিষয়ের প্রতি আন্তরিকতা, একাগ্রতা, এবং মনের মধ্যে সততা লালন করে পথ চললে সেই পথই আমাদের সাফল্যে নিয়ে যাবে একদিন।
লেখালেখির জগতে কীভাবে এলেন?
- ছোটবেলা থেকেই গল্প, কবিতা,ছড়া পড়তে আমার বেশ ভালো লাগতো। আমি অল্প বয়স থেকেই প্রেম শুরু করেছিলাম লেখালেখির সাথে। স্থানীয় পত্রিকায়ও লেখালেখি করেছি অনেক। এভাবেই লেখালেখির জগতে প্রবেশ। এর পর শুধুই লিখেছি। এখনো লিখছি, লিখেই যেতে চাই।
বর্তমান সময়ে ক্যারিয়ার ম্যাগাজিন কতটা দরকার বলে আপনি মনে করেন?
- পথিককে তার পথ চেনাতে হলে সঠিক পথপ্রদর্শকের প্রয়োজন তো আছেই। আর এ রকম একটি ম্যগাজিন বর্তমান সচেতন তরুণদের আরো ভালো দিকনির্দেশনা দেবে এটাই স্বাভাবিক।

পড়া আত্মস্থ করার গোপন সূত্র

Print Friendly and PDF

www.naboprottoy.blogspot.com
আশিক স্কুলে পড়ে। বাবার ইচ্ছা সে অনেক বড় ডাক্তার হবে। আশিকও চায় তার বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে। কিন্তু আশিকের সমস্যা হচ্ছে সে সহজে পড়া মুখস্থ করতে পারে না। এরকম অনেকেই আছেন যাদের পড়া আত্মস্থ  করতে গলদঘর্ম হতে হয়।

কিন্তু কী এর সমাধান? জানাচ্ছেন- মো: মোজাম্মেল হোসেন
ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসা
যখন আপনি পড়ার টেবিলে বসবেন ফ্রেশ হয়ে বসুন। সারাদিনের ক্লান্ত শরীর নিয়ে কখনো টেবিলে বসা উচিত নয়। কারণ এতে পড়ায় মনোযোগ থাকেনা। ফলে সময় নষ্ট হলেও পড়া আত্মস্থ হয় না।
সময় নির্ধারণ করা
আপনি কোন বিষয় কতক্ষণ সময় ধরে পড়বেন তা নির্ধারণ করুন। কারণ, কোনো কাজ সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধতা রাখলে কাজটি দ্রুত শেষ হয়। অনেকে অনর্গলভাবে পড়তে থাকেন কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন না।
পড়ায় মন রাখুন
আপনি যখন পড়া শুরু করবেন তখন আপনার মনোযোগ পড়ার দিকে রাখুন। পড়ার সময় অন্য দিকে মন দেয়া যাবে না। তাছাড়া পড়তে বসে অন্য কোনো কাজ করবেন না। কেউ কেউ পড়ার ফাঁকে ফাঁকে অন্য কাজ করেন। যা কোনোভাবেই বাঞ্ছিত নয়।
বারবার পড়ুন
একটি বিষয় বারবার পড়ুন। বুঝে বুঝে পড়ুন। সবসময় তিনটি জিনিস অর্র্জন করার জন্য চেষ্টা করুন। পড়া, পড়া এবং পড়া। তাহলে  অবশ্যই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।
আরো কিছু টিপস
- যে বিষয়টা পড়বেন তা বুঝে পড়ার চেষ্টা করুন।
- পড়া কখনো হুবহু মুখস্থ করবেন না
- নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী দূর করুন।
- পড়ার রুমটি পরিপাটি রাখুন।
- লিখে রিখে পড়ুন।
- যে বিষয়টি বুঝতে সমস্যা হয় তা মার্ক করে রাখুন। পরবর্তী সময়ে শিক্ষকের সাহায্য নিন।
- শোয়ার পূর্বে পড়াগুলো একবার মনে মনে রিভিশন দিন।
- সবসময় মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাস রাখুন।

বাড়িয়ে নিন স্মৃতিশক্তি

Print Friendly and PDF
www.naboprottoy.blogspot.com
গাড়ির চাবিটা হারিয়ে ফেলেছেন। এই মাত্র বইটি রাখলেন কিন্তু খুঁজে পাচ্ছেন না। পরিচিত মানুষটার নাম মনে করতে পারছেন না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে ভাবছেন আপনার স্মৃতিশক্তি লোপ পাচ্ছে। ভয় পাচ্ছেন মনে মনে। আসলে এটা তেমন কোনো সমস্যাই না।
তবে হ্যাঁ একেবারেই মনে করতে পারছেন না বা বেমালুম ভুলে গেছেন আপনি গাড়িটি কোথায় পার্ক করেছেন! তবে ভাবনার কথা বই কি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন কিছু স্মৃতি হারাই। স্মৃতি না হারালে একদিন স্মৃতির পাহাড়ের আড়ালে আমরা আমাদেরকেই হারিয়ে ফেলবো। তাই এটা ভাবনার বা ভয়ের কোনো ঘটনা নয়। তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে এই স্মৃতি হারাবার মাত্রাটা যাতে সিরিয়াস পর্যায়ে না যায়। স্মৃতি শক্তি হারানোর রহস্য নিয়ে লিখেছেন নাজমুন নাহার মিলি
স্মৃতিশক্তি কী?
স্মৃতি হচ্ছে মনে রাখা। কোনো ঘটনা বা বিষয় স্বল্প বা দীর্ঘসময়ব্যাপী মনে রাখা। এই স্মৃতি ধারণ করার ক্ষমতাই হলো স্মৃতিশক্তি। গবেষণায় জানা যায়, স্মৃতিশক্তি তৈরি হয় এক জটিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, যাতে জড়িত থাকে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ ও বিভিন্ন যোগাযোগ-প্রক্রিয়া।
স্মৃতিশক্তি সাধারণত দুই ধরনের- স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিশক্তি ও দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি।
স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিশক্তি : যখন মস্তিষ্ক স্বল্প সময়ের জন্য তথ্য ধরে রাখে অর্থাৎ কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিটের জন্য, তাকে স্বল্পস্থায়ী স্মৃতিশক্তি বলে।
দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি : মস্তিষ্ক যখন উদ্যমের মাধ্যমে ক্রিয়া করে, হতে পারে সেটি সজ্ঞানে অথবা অজ্ঞানে এবং যা নিজের কাছে খুবই অর্থবহ, সেগুলোই দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তির রূপ নেয়। দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতির ক্ষেত্রে মানুষ দীর্ঘসময় ধরে কোনো বিষয় মনে রাখতে পারে।
যে কারণে লোপ পায় স্মৃতিশক্তি
২০ বছর বয়সটি আমাদের স্মৃতির জন্য একটি বিশেষ সময়। এই সময় আমরা একটি ধাপ অতিক্রম করি। স্বাভাবিকভাবে গঠনগত কারণেই খুব ধীরে ধীরে আমাদের স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে এ সময় থেকেই। পঞ্চাশের পর আমরা কোথায় কোন জিনিস রাখি তা ভুলে যাই। এক জায়গায় রেখে খুঁজি আরেক জায়গায়। এপয়েন্টমেন্ট ভুলে যাই। নতুন কারো সাথে পরিচয় হলে নাম মনে রাখাটা হয়ে যায় দু:সাধ্য। কিন্তু কেন এমন হয়?
নানা কারণে এমনটি হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যগত ও আরো অন্যান্য কারণ এর জন্য দায়ী। স্ট্রোক, ব্রেইন টিউমার, হরমনজনিত সমস্যা যেমন থাইরয়েড গ্রন্থির অতিক্ষরণ বা কমক্ষরণ ইত্যাদি নানা কারণে স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। তা ছাড়া এইচআইভি, যক্ষ্মা, সিফিলিস (শেষ পর্যায়ে), চর্মরোগ, ব্যাকটেরিয়াজনিত মস্তিষ্কের প্রদাহ (ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিস) ইত্যাদিও স্মৃতি হারানোর জন্য বিশেষভাবে দায়ী। ভিটামিন বি ১, বি ১২-এর ঘাটতিও আপনার স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিতে পারে।
আমরা অনেক সময় অনেক ওষুধ সেবন করি যা আমাদের স্মৃতিশক্তির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। যেমন- ব্যথা নাশক ওষুধ, ঘুমের ওষুধ, বিষন্নতা নিবারণী ওষুধ ইত্যাদি খেলে অনেক ক্ষেত্রে আমরা স্মৃতি হারাই। মাথায় আঘাতজনিত কারণেও স্মৃতি হারাতে পারে। যারা অ্যালকোহল সেবন করেন তাদের স্মৃতি হারাবার সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশি। মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, অনিয়মিত ঘুম বা নিদ্রাহীনতা, বিষন্নতা ইত্যাদিও আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পাবার অন্যতম কারণ।
কর্টিসল (একটি স্ট্রেস হরমোন) মস্তিষ্কের হিপপোক্যাম্পাসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যদি স্ট্রেস (মানসিক চাপ) দীর্ঘস্থায়ী হয়। স্ট্রেস মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। ঘুমের সমস্যা যেমন- ‘ইনসোমনিয়া’ আপনাকে ক্লান্ত রাখবে এবং দিনের বেলায় আপনার মনোসংযোগে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। ধূমপান বা অ্যালকোহল পানে মস্তিষ্কে স্ট্রোক হয়ে স্মৃতিহারা হতে পারেন। তা ছাড়া এই ধূমপান করার ফলে ধমনি সরু হয়ে মস্তিষ্কের অক্সিজেন-প্রবাহ কমিয়ে দেয় যা আপনার স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে দিতে পারে।

স্মৃতিশক্তি বাড়াবার এবং নষ্ট না হবার কিছু কৌশল:

কোলেস্টোরেল নিয়ন্ত্রণ
মস্তিষ্কে কম রক্ত প্রবাহ হলে তা স্মৃতিশক্তির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ৩ হাজার ৭শ’ লোকের মধ্যে এক ব্রিটিশ গবেষণায় দেখা যায়, কম রক্ত প্রবাহের কারণে এবং এইচডিএলের নিম্ন স্তরের কারণে স্মৃতিশক্তি হারানোর ঝুকি ৫০% বেড়ে যায়। এ দিকটি মাথায় রেখে এইচডিএল বাড়াতে হবে। কোলেস্টোরেল নিয়ন্ত্রণে রাখুন।


মস্তিষ্কের ব্যায়াম

আমরা শারীরিক গঠন ও শক্তি ঠিক রাখার জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম করি। কিন্তু মস্তিষ্কের ব্যায়াম? প্রথমে তো শুনে আপনার হো হো হাসিই পেতে পারে। কিন্তু জেনে রাখুন, মাংসপেশির শক্তির মতো স্মৃতিশক্তিও ‘ব্যবহার করুন অথবা হারান’-এ নীতিতে চলে। আপনি যত মস্তিষ্কের ব্যবহার করবেন, আপনার স্মৃতিশক্তিও তত ধারালো হবে। আর মস্তিষ্ককে অধিক সক্রিয় করতে ‘নিউরোবিক’ ব্যায়াম করুন প্রতিদিন। যেমন- চোখ বন্ধ করে গোসল করা বা ড্রেসআপ করা, নতুন খেলা শেখা, খবরের কাগজে নতুন নতুন পাজল বা ক্রসওয়ার্ড চর্চা করা করুন। সম্ভব হলে প্রতিদিনই। যাঁরা নিয়মিত বুদ্ধির চর্চা করেন বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের স্মৃতি হ্রাস তুলনামূলকভাবে কম হয়। তাই ভালো স্মৃতিশক্তি পেতে চাইলে নিয়মিত পড়ুন, শিখুন ও সমস্যা সমাধানে অংশগ্রহণ করুন। অলসভাবে বসে থাকলে স্মৃতিশক্তি ভোঁতা হয়ে যায়।


মনোযোগ দিয়ে পড়ুন

আপনার স্মৃতিতে ধরে রাখতে হলে বিষয়টি মস্তিষ্কে লেখা হতে হবে। আর যদি যথেষ্ট মনোযোগ না দেন, মস্তিষ্কে লেখার কাজটি হবে না। মস্তিষ্কের যথাযথ স্থানে একটি তথ্যের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে প্রায় আট সেকেন্ড সময় লাগে। তাই বহু কর্ম একসঙ্গে করতে গেলে মনোযোগ নষ্ট হয়। তাই মনোযোগের সাথে ধীরে কাজ করুন।
অন্বেষা পরীক্ষার আগে পড়ার সুযোগ পায়নি। কিন্তু পরীক্ষা তো দিতেই হবে। হলে যাবার আগে সে তার এক সহপাঠীকে বলল- এই প্রশ্নের উত্তরগুলো আমাকে একবার বলবে? সহপাঠী তাকে উত্তরগুলো পড়ে শুনালো। দেখা গেলো ওই একবার শুনে সে পরীক্ষায় ভালো করলো। অর্থাৎ অন্বেষার শুনে শেখার ক্ষমতা ভালো। তবে অধিকাংশ মানুষ দেখে শেখে। তারা ভালোভাবে শেখে পড়ে পড়ে অথবা যা দেখার তা দেখে দেখে।


লিখে রাখুন

যা মনে রাখতে চান সে বিষয়গুলো খাতায় বা ডায়েরিতে লিখুন। জটিল বিষয়গুলোর নোট নিন এবং পরে ক্যাটাগরি অনুযায়ী পুনর্বিন্যাস করুন। অপেক্ষাকৃত বেশি জটিল বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে মুখস্থ করার চেষ্টা না করে মৌলিক ধারণার ওপর জোর দিন। বিষয়টি আগে নিজে বুঝে নিন, তারপর অন্যকে নিজের ভাষায় বোঝানোর ক্ষমতা অর্জন করুন। দেখবেন অনেক সহজ হয়ে গেছে।


স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভাস

স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। ভালোলাগার জন্য নয়, পুূিষ্টকর খাবার খান। নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। খাদ্যতালিকায় এমন খাবার রাখুন যার খাদ্যমান অনেক বেশি। ফল, শাকসবজি, খোসাসমৃদ্ধ দানাদার শস্য ও স্নেহজাতীয় (শস্যদানার তেল, মাছের তেল) খাদ্যে অনেক স্বাস্থ্য উপকারী গুণ আছে। পাশাপাশি এগুলো স্মৃতিশক্তির উন্নয়ন ঘটায়। নিচে কিছু স্মৃতিশক্তি-সহায়ক খাদ্য-উপাদান দেয়া হলো-
ভিটামিন বি-৬, বি-১২ এবং ফলিক এসিড আছে- পালংশাক ও গাঢ় সবুজ শাক, অ্যাসপারাগাস, স্ট্রবেরি, বাঙ্গি, তরমুজ, শিমের কালো বিচি এবং অন্যান্য ডালজাতীয় শস্যদানা, টকজাতীয় ফল ও সয়াবিনে।
অ্যান্টি অক্সিড্যান্টসমূহ আছে জাম, মিষ্টি আলু, লাল টমেটো, পালংশাক, ব্রকলি, সবুজ চা, বাদাম ও বিচি, টকজাতীয় ফল এবং কলিজায়।
তাই বিভিন্ন ধরনের রঙিন শাকসবজি ও ফল খান। সাথে উদ্ভিদজাত তেল দিয়ে রান্না করা তরকারি খান। প্রাণীজ তেল আপনার ধমনি সরু ও বন্ধ করে দিতে পারে। এগুলো পরিহার করলে তবেই মস্তিষ্ক আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তখন আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন স্মৃতিধর মানুষ।
স্বাস্থ্যবান্ধব অভ্যাসগুলো লালন
- আপনাকে চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দুশ্চিন্তা বা টেনশনে মানুষের অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি থেকে গ্লুকোকরটিকয়েড নামক এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন মস্তিষ্কের কোষগুলোকে দ্রুত আক্রান্ত করে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
- অ্যালকোহল ও ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
- স্বভাবের দিক দিয়ে গোছানো হলে অনেক কিছুই সহজে মনে থাকে। নির্দিষ্ট জিনিস সব সময় নির্দিষ্ট জায়গায় রাখলে প্রয়োজনের সময় হাতড়ে বেড়াতে হয় না।
- নেতিবাচক চিন্তা মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন। সন্দেহবাতিক মন মস্তিষ্কের ক্ষতি করে।
- মনের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগটা খুব গভীর। তাই মনের পরিচর্যা করুন। নিজেকে নিয়োজিত রাখুন সৃষ্টিশীল কাজে।
- নিয়ম করে দিনের কিছু সময় মেডিটেশন করুন। যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। সম্ভব না হলে অন্তত সকাল-সন্ধ্যা খোলা ময়দানে হাঁটুন। নামাজের ভেতর এ সবগুলো উপাদানই বিদ্যমান। তাই মুসলমানরা নিয়মিত নামাজ আদায়ের চেষ্টা করুন।
- সারাক্ষণ কাজ আমাদের মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে তোলে। ক্লান্তি মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
স্মৃতিশক্তি দৃঢ় করতে ঘুম
স্মৃতিশক্তি সংহত বা দৃঢ় করার জন্য ঘুম চাই। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে পড়া বা শেখা বিষয়গুলোকে মনে রাখার জন্য ঘুম দরকার। বোস্টনের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের ঘুম গবেষক জেফরি এম ইলেনবোগেন বলেন পড়া পড়ে মগজে ঢোকানো, পঠিত বিষয়গুলো মগজে স্থিত করা এবং পরে ব্যাপারগুলো মনে করতে পারা। কোনো কিছু শেখার ব্যাপারকে এই তিনটি স্তরে ভাগ করা যেতে পারে।
এর মধ্যে পড়ে মগজে ঢোকানো এবং পরে বিষয়গুলো মনে করতে পারা এ দুটো স্তর সম্পন্ন হয় জেগে থাকা অবস্থায়। আর শেখা, পঠিত বা মুখস্থ বিষয় মগজে স্থিত হওয়ার ব্যাপারটি ঘটে ঘুমের সময়। সুতরাং নিয়ম মাফিক ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
হাইফা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রেইন অ্যান্ড বিহেভিয়ার রিসার্চ সেন্টারের গবেষণায় দেখেছেন, দিনের বেলায় ৯০ মিনিটের হালকা ঘুমও স্মৃতিশক্তিকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সহায়ক। এমনকি ছয় মিনিটের ঘুমও স্মৃতিশক্তিকে সংহত করতে পারে এ রকম ফলই পেয়েছেন জার্মানির ডুসেলডর্ফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণায়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্য প্রসেডিং অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের বিশেষজ্ঞরা জানান ভাঙা ভাঙা ঘুম স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে ফেলতে পারে। মস্তিষ্ক ও ঘুম দুটি পারস্পরিক বিষয়। প্রায়ই দেখা যায়, ঘুম পুরো হওয়ার আগেই কেউ যদি জেগে যায় তাহলে সে হঠাৎ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। এ রকম বারবার হলে বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের নিউরনগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। শেখা জিনিস মস্তিষ্কে সংহত হয় না। অতএব, মনে করার শক্তি বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম চাই।

সুন্দর হোক হাতের লেখা

Print Friendly and PDF

Nabo Prottoyকাকের ঠ্যাং, বকের ঠ্যাং‘-হাতের লেখা নিয়ে প্রায়ই 
এমন মন্তব্য শোনা যায়।
অনেকে মনে করেন, কম্পিউটারের এই যুগে হাতের লেখা ভালো না হলে কী
আসে যায়। কিন্তু ঝকঝকে, সুন্দর হাতের লেখার কদর সব সময়ই আছে।
আর এ জন্য বাড়ি থেকেই চর্চা শুরু হওয়া উচিত। যেদিন শিশুর হাতে খড়ি হলো, সেদিন থেকেই নজর দিন তার হাতের লেখার দিকে।
শিল্পী হাসেম খান শিশুদের হাতের লেখা সুন্দর করার সহজ কিছু পরামর্শ দিলেন। ‘শিশুদের সামনে কারও সুন্দর হাতের লেখা তুলে ধরতে হবে, 
সেই লেখা অনুসরণ করে যাতে তারা নিজেদের লেখা সুন্দর করতে পারে।
প্রতিটি বর্ণ যাতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, এমনভাবে লিখতে হবে।‘ বলেন তিনি। শিশুদের প্রায়ই তাগাদা দেওয়া হয় দ্রুত লেখার জন্য। হাতের লেখা খারাপ হওয়ার এটি আরেকটি কারন বলে মনে করেন তিনি।ঘড়ি ধরে দ্রুত লেখা অনুশীলন করা যেতে পারে এ ক্ষেত্রে। হাতের লেখা সুন্দর রেখে দ্রুত লেখায় অভ্যস্ত করে তুলতে হবে শিশুদের। প্রথম দিন হয়তো এক পাতা লিখতে অনেক সময় লাগবে। অনুশীলনের মাধ্যমে এরপর সময়টি ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে মনে করেন হাশেম খাঁন।সুন্দর হাতের লেখার জন্য অনুশীলনের বিকল্প নেই। বাড়িতে তো বাচ্চকে অনুশীলন করাবেনই। বাইরেও আজকাল হাতের লেখা সুন্দর করানোর নানা কোর্স চালু হয়েছে। শিশুদের হাতেখড়ি হওয়ার পর খাতা-কলমে লেখা কিছুটা আয়ত্বে চলে এলেই হাতের লেখা সুন্দর করার অনুশীলন শুরু করা উচিত। এ জন্য কিছু উপায় বাতলে দিয়েছেন শিশু একাডেমীর সুন্দর হাতের লেখা প্রশিক্ষণ বিভাগের প্রশিক্ষক মেজবাহ উদ্দিন। ‘তারাহুড়ো এবং অমনোযোগিতা বাচ্চাদের হাতের লেখা খারপ হওয়ার অন্যতম কারন। বলপয়েন্ট কলম নয়, বরং বাচ্চাদের উচিত পেনসিল দিয়ে লেখা। মূল পড়ামোনার পাশাপাশি প্রতিদিন একপাতা করে লেখা শেখানো, অনুশীলন করানো উচিত।‘ বলেন তিনি। তার পরামর্শ হলো-
* বাচ্চাদের খাতার পুরো লইন ভরে লেখানো উচিত।
* প্রতিটি বর্ণ যেন সমান হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
* পেনসিলের শিষ থেকে এক ইঞ্চি দূরত্বে পেনসিল ধরতে হবে।
* সঠিক উচ্চতার চেয়ার-টেবিলে বসে লেখা লিখতে হবে। মেরুদণ্ড সোজা করে বসতে হবে।
* প্রাথমিক পর্যায়ে বর্ণগুলো সোজা করে লিখতে হবে।
* তিনকোনা বর্ণগুলো সবচেয়ে সোজা। আগে সে অক্ষরগুলো থেকে লেখা অনুশীলন শুরু করতে পারে। যেমন-ব,ক।
* খাতায় বর্ণে আকারে ফোঁটা দিয়ে দিন। শিশুকে তার উপর হাত ঘুরিয়ে বর্ণ লেখা অনুসরণ করান।
* কোন বর্ণে মাত্রা আছে, কোনটায় অর্ধমাত্রা ইত্যাদি ভালোমতো জেনে সে অনুযায়ী অনুশীলন করান।
সূত্র-প্রথম আলো (নকশা)- ২০১২

কিভাবে লেখা-পড়া করব?

Print Friendly and PDF

নব প্রত্যয় ফাউন্ডেশনমা. হাবিবুর রহমান
সারা বছর লেখাপড়া না করে পরীক্ষার পূর্বে চোখে অন্ধকার দেখা কোন কোন সময় পড়া ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া কোন কোন শিক্ষার্থীর স্বভাব ভাই হতাশ হবেন না। সহিঞ্চু হয়ে পড়তে শুরু করেন। পাহাড় বলে যা মনে হচ্ছে তা মিষ্টি হালুয়া বলে মনে হবে। যা ভুল হয়েছে তা হয়েছে। আর বিলম্ব না করে ধৈর্যশীল হয়ে পড়তে থাকুন। দেখতে পাবেন কয়েক দিনেই অনেকটা এগিয়ে গেছেন। বসে বসে ভাবলে কিছু লাভ হবে না। ওতে যা পারতেন তাও পারবেন না। যে আপনার চেয়ে ভাল জানে সে আপন সহপাঠী হলেও অহংকার ত্যাগ করে তার কাছে সহযোগিতা নিন। তাতে কোন লজ্জাবোধ করবেন না। পূর্ববর্তী মহা মনীষীগণ তো এরূপ করেই উচ্চ আসরে আসীন হয়েছেন। লজ্জা তাদের অধ্যয়নের কোন ক্ষেত্রেই পরাভূত করতে পারেনি। অনুরূপ তারা অহংকারও করতেন না। কারণ অহংকার করলেই মানুষ কার্য ক্ষেত্রে ঠকে যায়। যে বেশী জানে তার কাছে গিয়ে নত হয়ে পড়া-শুনা নেয়া ভাল।
মেধাবী ছাত্র শিক্ষকের মত সহপাঠীকে পড়িয়ে দিতে পারে। কোন ভাই লজ্জাবোধ করে আজ তার কাছে যাচ্ছে না। কাল সে আপনাকে ছেড়ে উচ্চ শ্রেণীতে পদার্পন করবে এবং শিক্ষার উচ্চ আসন দখল করে নিবে। আপনি যেখানে বর্তমান, সেখানে পড়ে থেকেই অর্থ সম্মান হারাবেন। অনেক শিক্ষার্থী ভাবে যে, আমি খুব জানি। এ ধারণা সর্বনাশের মূল। খরগোশ বেশী দৌড়াতে পারলেও অনেক সময় কচ্চপের কাছে হেরে যায়।
তাই বছরের প্রথমে প্রত্যেকদিনকার পড়া প্রত্যেক দিনইে পড়ে নেয়া উচিৎ। কখনও অলসতা করে ফেলে রাখা উচিৎ নয়। তাতে পরীক্ষার সময় মাথায় পাহাড় চাপবে। ফলে অকৃতকার্যই অনিবার্য হয়ে দাড়াবে।
একদা হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহর তরফ থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হলেন যে, আগামীকাল প্রাতে প্রথমে মাঠে যা দেখতে পাবে, তাই আহার করবে। তিনি প্রাত:কালে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখলেন একটা বিরাট পাহাড়। পাহাড় দেখেই মূসা (আঃ) ভীত হলেন। ঘাবরে গেলেন কি করে এত বড় পাহাড় খাব। কিন’ খোদার নির্দেশ । তা অমান্য করা যায় না। তাই তিনি অগ্রসর হতে লাগলেন । যতই নিকটবর্তী হতে লাগলেন ততই বৃহৎ দর্শন পাহাড় ভুদ্র হতে লাগলো। নিকটে যেয়ে দেখলেন পাহাড় নয় এক টুকরা হালুয়া মাত্র। পরম আনন্দে মুখে ফেলে দিয়ে সুস্বাদু হালুয়াটা খেয়ে ফেললেন।
ভাই শিক্ষার্থী ! আপনি জানেন এঘটনার শিক্ষা কি? শুনুন এঘটনার দ্বারা শিক্ষা হল- কোন কাজ দূর থেকে কঠিন মনে হলেও চেষ্টা করলে তা অতি সহজ হয়ে ওঠে। কাজ দেখে কখনও ভয় পেতে নেই। গুরুত্ব সহকারে একটু চেষ্টা করা দরকার। শিক্ষা কালীন যারা অশ্লীল ও বেহায়াপনা কাজে জড়িত থাকে, তারা পাঠে মনঃসংযোগ করতে পারে না। পড়াও তাদের হয় না। মনটা থাকে মাতাল, অসৎ সাহচর্যে , অশোভ গান, সংগীত, দুন্দ পুস্তক, অশ্লীল আলাপ, নারী সম্প্রীতি ও মোবাইল ব্যবহার পরিত্যাগ করতে হবে এবং একান্ত অলংঘনীয় কর্তব্য । নতুবা লেখাপড়ায় সাফল্য অর্জন করতে পারবে না।
প্রিয় পাঠক,শিক্ষার্থী বন্ধুগণ! আমার এই পরামর্শটা কেমন লাগলো? অশোভ মনে হল না তো? আসলে আমাদের জীবনের মুহুর্তগুলোকে এভাবে ভেবে-চিন্তে পরিচালনা করা উচিৎ। আসুন আমরা উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় নিজেরেকে যথাযথ আত্ননিয়োগ করি এবং আদর্শ মানব হিসেবে গড়ে তুলি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।

মন বসে না পড়াশোনায়

Print Friendly and PDF
এস এম মাহফুজ
নব প্রত্যয় ফাউন্ডেশন
মুরব্বি, শিক্ষক, অভিভাবক সবাই একটা কথা বলেন ‘মন দিয়ে পড়। মনের কলিতেও তারই প্রতিধ্বনি হয়েছে’ মন দিয়ে লেখাপড়া, মন দিয়ে খেলা, সব কাজে মন দিতে করো নাকো হেলা। আসলে এই মনই সকল কাজের মূল। যেখানে যে কাজে মন নেই সে কাজটাই মাটি। ধর তুমি পড়ার টেবিলে বসে আছ, পড়ছ কিন্তু পড়ায় মন নেই। তোমার পড়া কখনেই আয়ত্ত হবে না। তাই পড়াশোনায় মন বসানোটা আবশ্যক। এক্ষেত্রে কয়েকটি টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে।
তুমি কী আসলেই অমনোযোগী?
তোমার পড়াশোনায় মন নেই মানে হচ্ছে তুমি অমনোযোগী। এ জন্য প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন কর আমি কি সত্যিই অমনোযোগী? তোমার মন যদি সায় দেয় আমি অমনোযোগী নই, তাহলে তুমি পড়। একজন ছাত্র হিসেবে অমনোযোগটা খারাপ এটা যখন তুমি বুঝতে পারছ। তুমি যখন মনোযোগী ছাত্র হিসেবে নিজেকে ভাবছ তাহলে মন দিয়েই পড়।
কারণ চিহ্নিত কর
ধরা যাক তোমার সত্যিই পড়ায় মন বসে না, তুমি অমনোযোগী। এ জন্য প্রথমেই কারণ চিহ্নিত কর ‘কেন তোমার পড়ায় মন বসে না? কারণ থাকতেই পারে। সে কারণগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করার চেষ্টা কর। এমন হতে পারে তোমার ঘুম আসে বা তোমার শারীরিক দুর্বলতা আছে। সে জন্য তুমি ডাক্তারের শরণাপন্ন হও। হতে পরে বেশিক্ষণ পড়তে পড়তে অমনোযোগী হয়ে যাও, তখন একটু পর পর পাঁচ মিনিট বিশ্রাম নাও। হতে পারে একটা ঘটনায় তুমি মুষড়ে পড়েছ, সে ঘটনা দ্রুত মিট করার চেষ্টা কর। ব্যস! এবার মনোযোগী হও।
মন বসাতে প্রেরণা
প্রেষণা মানে অনুপ্রেরণা। তুমি যে পড়ছ, কেন পড়ছ তা তোমার কাছে স্পষ্ট থাকা চাই। ধরা যাক তুমি পরীক্ষায় পাসের জন্য পড়ছ, এটা তুমি জান কিন্তু পাস করলে কী হবে জান না। তোমাকে ভাবতে হবে ভালো পাস করলে আমি পুরস্কার পাবো, বড় ক্লাসে উঠব, বাহবা পাবো এভাবে সব পরীক্ষায় ভালো পাস করলে অনেক বড় হবো এ ধরনের অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে পড়, মন আসবে।
টার্গেট করে পড়ুন
পড়ায় মন বসাতে টার্গেট করে পড়। সাময়িক টার্গেট। ধর কাল ক্লাসে একটা পরীক্ষা। রাতে পড়তে বসলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেল পরীক্ষায় আমি ভালো নাম্বার পাবোই, এই ভেবে পড়তে শুরু কর মন আসবে। কিংবা তুমি পড়তে চাওনা সবাই তোমাকে বকে। একটা জিদ ধর যে, এবার আমি সবাইকে দেখিয়ে দেবো পরীক্ষায় ভালো পাস করে, এ জিদই তোমার মনকে নিঃসন্দেহে পড়াশোনায় বসাবে। টার্গেটের ক্ষেত্রে কম করবে কেন? বেশিই কর।
ঝামেলা মুক্ত হয়ে পড়
পড়তে বসতে নানা ঝামেলা মাথায় নিয়ে বসলে মন না বসারই কথা। সেক্ষেত্রে তুমি সব ঝামেলাকে ঝেড়ে ফেলে, নিরিবিলি জায়গায় পড়তে বস, তখন তোমার চিন্তা একটাই থাকবে পড়া আর পড়া। তোমার ‘এক মন’ শুধুই পড়া। সুতরাং মন বসবে না কেন?
পড়ছেন যেহেতু মন দিয়েই পড়ুন
তুমি পড়ার জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে টেবিলে বসেছ। এর অর্থ এখন পৃথিবীর সব কাজ তোমার কাছে অর্থহীন, তোমার একমাত্র কাজ পড়া, তুমি টেবিলে যতক্ষণ বসে আছ পড়ার জন্য।
সুতরাং তুমি পড়ছ যেহেতু অত্যন্ত নিবিষ্ট মনেই  পড়। কারণ এখন নিবিষ্ট মনে না পড়ার তো কোনই  মানে নেই।
এটা তো ঠিক তুমি মনোযোগ দিয়ে এক ঘণ্টা পড়লে আর অমনোযোগী হয়ে পাঁচ ঘণ্টা পড়লেও তা কাভার হয় না। তোমার মনোযোগ দিয়ে পড়ার মাধ্যমে যে পড়াটা তোমার মাথায়  ঢুকে গেছে তা তুমি কখনোই ভুলবে না। তোমার গড়িমসি কিংবা পড়তে বসি বসি করে নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছ। মনে রাখবে কেউ জোর করে তোমাকে পড়াতে পারবে না তোমার নিজের তাগিদ যদি না থাকে।

 
Design by AbsCreation